আস্তাকুড়ে স্বাধীনতা
উর্মি রহমান
আস্তাকুড়ে জন্ম আমার
একাত্তরের পরের কথা।
ভদ্র লোকে বলত দয়ায়,
মা ছিলো মোর বীরাঙ্গনা।
স্বাধীন দেশে উড়ছে যখন
লাল সবুজের বিজয় কেতন
আমি তখন শুকছি ধুলোয় স্বাধীনতার গন্ধ কেমন।
একটু যখন দু’পা হলো,
চোখ ফুটলো, ফুটলো ভাষা
ঠিক তখনই হোঁচট খেলাম লোকমুখে মোর জন্ম কথা।
বলতে কথা ভীষন মানা,
সবাই বলে শুনব নানা না
বীরাঙ্গনার ছেলের আবার
জায়গা কিসের? কিসের ভাষা?
জন্মে যাহার নেই পদবী
সাধীনতায় কিসের দাবী।
সাহস করে যেই বলেছি
বলি আমার সবচে বেশি।
চারিদিকে রোল পড়ছে
ছি ছি ছিছি বলছে একি!
স্বাধীন মানুষ, স্বাধীন ভাষা,
হাজার খানেন গালিও জানা।
শুনতে হলো মায়ের নামে
যে মা আমার সর্বংসহা।
ঐ যে কেতন আকাশ তুলে,
বলছ কথা খই ফুটিয়ে
স্বাধীনতা করছ পালন,
ঢোল পিটিয়ে, ঢাক পিটিয়ে
আমি কিন্তু দেখছি সবই
হাসছি বসে আস্তাকুঁড়ে।
আজকে আমায় মূক বানিয়ে
বলছ কথা টকশো খুলি।
ক’দিবসে করছ বসে
মুল্যবোধের সস্তা ফেরী।
স্বাধীনতার আসল মানে
কজন জানো? কজন মানে!
তিরিশ লক্ষ রক্ত স্রোতে
ভাসলো যে দেশ স্বাধীন হতে
স্বাধীনতা সেই দেশেতে
শিকল পরা আমার বুকে।
মূক ভেঙে যেই গাইবো আমি,
বধির হবে হীন সকলে
শিকল ভাঙার দীপ্ত গানে
আসবো ঠিকই কাল প্রভাতে।